ইতিহাসে রচিত তার অতীত ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় ৪১ বছরের ঐতিহ্য লালিত চাঁদপুর জেলার শ্রেষ্ঠ কলেজগুলির মধ্যে পুরানবাজার ডিগ্রী কলেজ অন্যতম। কলেজটির রয়েছে এক সমৃদ্ধ এবং গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। ‘আসাম বেঙ্গল গেটওয়ে’ খ্যাত চাঁদপুর বাংলাদেশের এক সমৃদ্ধ পদ্মা মেঘনা এ জনপদ। শিক্ষা, সংস্কৃতি , ব্যবসা বাণিজ্য এক অনন্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে এ জনপদের মানুষ শিক্ষা বিস্তারে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেছে সমাজ উন্নয়নের অগ্র-পথিক হিসেবে। শিক্ষাকে তারা ধারণ করেছে জাতির উন্নতির সোপান হিসেবে। পুরান বাজারের ব্যবসায়ীদের ঐক্যমতের ভিত্তিতে ১৯৮১ সালের ২৬ শে অক্টোবর পুরান বাজার মধুসূদন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক সভার মাধ্যমে কলেজটির শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক জনাব হাবিবুর রহমান। উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন জনাব জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম, জনাব মিজানুর রহমান পাটোয়ারী, জনাব আবু তাহের আখন্দ, জনাব আব্দুল করিম পাটোয়ারী , জনাব ডা. এম এ গফুর, জনাব এম এ মাসুদ ভূঁইয়া ,জনাব এ ডব্লিউ এম তোয়াহা মিয়া অধ্যক্ষ চাঁদপুর সরকারি কলেজ, জনাব ক্যাপ্টেন করিম উদ্দিন অধ্যক্ষ চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজ সহ পুরান বাজারের সকল স্তরের ব্যবসায়ী বৃন্দ। 48 জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে ১৯৮১-১৯৮২ শিক্ষাবর্ষে পুরান বাজার মধুসূদন উচ্চ বিদ্যালয় কলেজটির পথ চলা শুরু হয়। শুরুতে কলেজের বিজ্ঞান এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ নিয়ে যাত্রা শুরু হয়। একটি সরকারি কলেজের পাশাপাশি একটি বেসরকারি কলেজ তার সক্রিয়তা নিয়ে এগিয়ে চলে। ১৯৮৩ সালে কলেজটি থেকে সর্বপ্রথম ছাত্র ছাত্রীরা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। ১৯৮৫ সালের কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে কলেজ থেকে বাণিজ্যে দ্বিতীয় স্থান এবং অষ্টম স্থান অধিকার করে কলেজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য সমুন্নত করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড মেধাতালিকায় স্থান নিশ্চিত করে তার উজ্জ্বল অবস্থান তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানটি থেকে ১৯৯৪ সালে দুইজন,১৯৯৬ সালে একজন, ১৯৯৭ সালে দুজন,১৯৯৮ সালে দুজন, ১৯৯৯ সালে চারজন, ২০০০ সালে দুজন, ২০০১ সালে চারজন এবং ২০০২ সালে দশজন ছাত্র-ছাত্রী কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে মেধা তালিকায় স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে।
শিক্ষা একটি নান্দনিক ও ধ্রুপদীধারার নির্মাণমুখী প্রক্রিয়া যাতে মানবকুসুমকে প্রস্ফুটিত করে পূর্ণতা দিতে হয়। এ মহান ব্রতে প্রয়োজন হয় দক্ষ নির্মাণশিল্পী আর বিকাশ-বান্ধব সুস্থির পরিবেশের। তবেই মানভকুসুম পূর্ণতা পেয়ে মনুষ্যত্বের অমূল্য উপাদানে শোভিত হয় জীবন মালঞ্চে। নদীমাতৃক সৌন্দর্যে কুল কুল বহমান ডাকাতিয়ার তীরে আপন প্রতিষ্ঠায় চারদিক বিমোহিত করে গড়ে উঠা পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজ শিক্ষার তেমনই এক সর্বানুকুল কাঙ্ক্ষিত প্রতিষ্ঠান যাতে সুন্দর ও সুস্থির পরিবেশে দক্ষ ও ব্রতি শিক্ষকের সমৃদ্ধ পাঠদানে প্রস্ফুটিত হয় শিক্ষার্থীর জীবনকুসুম। কেবলমাত্র পরীক্ষার্থী কিংবা সনদধারী মেধাবী নয়, এ বিদ্যায়তন কোমলমতি শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলে দেশপ্রেম ও মানবিকবোধ সম্পন্ন নাগরিক হিসেবে যারা শিক্ষা সমাপনে রাষ্ট্রের মহামূল্যবান সম্পদে পরিণত হয়। অন্তর্লোকে নৈতিকতা ও মূল্যবোধের উদ্বোধনে মননশীল ও সৃজনশীল আদর্শ প্রজন্ম নির্মাণে পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজ প্রয়াসে অকুন্ঠ ও নিবেদিতপ্রাণ। আজ যারা উচ্চ শিক্ষার মহাস্রোতে জীবনতরী ভাসাতে স্থিরলক্ষ্য হয়েছো, তোমরা ও তোমাদের শ্রদ্ধেয় অভিভাবকমন্ডলীকে জানাই আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। তোমাদের দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়ে এগিয়ে নেওয়ার জন্যে পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজ তোমাদের হাতছানী দিয়ে ডাকছে নিরন্তর। তোমাদের দৃপ্ত পদচারণায় মুখরিত হউক এ কলেজ প্রাঙ্গন, মুখরিত হোক যাযাবর স্মৃতি ভবন, বাদামতরু, রবীন্দ্র নজরুল চত্বর আর চেতনায় প্রদীপ্ত হোক শহীদ মিনারের পূণ্য বেদী। কলেজের সাত মার্চ চত্বর তোমাদের বিমোহিত করুক ইতিহাসের রোমাঞ্চ জাগিয়ে। নদী ও নিসর্গ শোভায় তোমাদের শিক্ষা হোক কালজয়ী। তোমাদের অনাগত সাফল্যে পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজ হয়ে উঠুক গর্বিত জননীর মত দ্মুতিময়। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ চিরজীবি হোক।
পুরান বাজার ডিগ্রী কলেজ ওয়েবসাইট খুলে সরকারের ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এবং সরকারের ভিশন ২০২১ এর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটটিতে যে তথ্য, উপাত্ত থাকবে তা অবাধ তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করবে এবং তা সবার কাছে সহজলভ্য হবে। এটা নিশ্চিত যে, আমাদেরকে ইনফরমেশন হাইওয়েতে উঠতে গেলে, চলতে গেলে তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করণের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারী দপ্তর, পরিদপ্তর ও অধিদপ্তরের কার্য্যক্রমে গতিশীলতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে এবং সেবার মান উন্নত হবে ও দূর্নীতি সহনীয় মাত্রায় নেমে আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি। পরিশেষে পুরান বাজার ডিগ্রী কলেজ এর ওয়েবসাইটি সফলতার সাথে সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের সেবা সকলের কাছে পৌছে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি।